আন্তর্জাতিক মানের বা বিভাগীয় স্টেডিয়ামের জন্য এতদিন জোর দাবি জানিয়ে আসছিলেন রংপুরের ক্রীড়াপ্রেমীরা। তারা অধীর অপেক্ষায় ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ধরনের স্টেডিয়াম নির্মাণের দিকনির্দেশনা দেবেন। অবশেষে তাদের সেই অপেক্ষার পালা শেষ হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক মানের স্টেডিয়াম নির্মাণের জন্য ভূমি অধিগ্রহণের চিঠি পেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আন্তরিক অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন রংপুরবাসী।
ক্রীড়া সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, রংপুর বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে তিন সদস্যের কমিটি নগরীতে উত্তম হাজীরহাটে কম্বলপুর গ্রামে আন্তর্জাতিক মানের স্টেডিয়াম বা বিভাগীয় স্টেডিয়াম নির্মাণে ১৫ একর জমি নির্বাচন করে অনেক আগেই অনুমোদন ও অধিগ্রহণের জন্য জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কাছে জানায়। নানা কারণে বিলম্ব হলেও সবশেষ গত ১ আগস্ট যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব পরিমল সিংহ রংপুর বিভাগীয় স্টেডিয়ামের ভূমি অধিগ্রহণ প্রকল্পের স্মারকে স্বাক্ষর করেছেন।
অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক আকবর আলী, মিস্টার ফিনিশার খ্যাত নাসির হোসেন, সোহরাওয়ার্দী শুভ, সাজেদুল ইসলাম, আলাউদ্দিন অপুসহ জাতীয় পর্যায়ের ক্রিকেটাররা সময়ের আলোকে বলেন, রংপুর বিভাগীয় স্টেডিয়াম আন্তর্জাতিক মানের স্টেডিয়াম। নির্মাণের পর খেলা শুরু হলে এটি রংপুরে জাতীয় পর্যায়ের খেলোয়াড় তৈরির মাধ্যম হবে। রংপুরের খেলোয়াড় দেখবে আলোর মুখ। জাতীয় ক্রিকেট, ফুটবলসহ ক্রীড়াঙ্গনে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখবে এখানকার খেলোয়াড়। এতে রংপুরের ক্রীড়াপ্রেমীদের স্বপ্ন যেমন বাস্তবায়িত হবে, একই সঙ্গে রংপুরে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ নানামুখী উন্নয়ন ঘটবে। রংপুর আধুনিক শহরে রূপ নেবে বিভাগীয় স্টেডিয়ামের মাধ্যমে। আন্তর্জাতিক মানের স্টেডিয়াম হলে যেমন বাইরে থেকে দর্শনার্থী আসবেন, সেই সঙ্গে হোটেল-মোটেল, বিনোদন পার্কসহ নানামুখী আয়ের উৎস সৃষ্টি হবে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, বিভাগীয় স্টেডিয়াম নির্মাণের জন্য সদর উপজেলার তালুক তামপাট মৌজায় ১২ একর জমি চাহিদা ছিল। রংপুর ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আনোয়ারুল ইসলাম ১৫ একর জমি প্রাথমিকভাবে নির্বাচন করেছেন। ফলে জমি নিয়ে কোনো জটিল সৃষ্টি হবে না।
এর আগে প্রধানমন্ত্রীর আশীর্বাদে বিসিবি পরিচালক অ্যাডভোকেট আনোয়ারুল ইসলাম রংপুর বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ নির্বাচিত হওয়ার পর রংপুর ফুটবল স্টেডিয়ামের আধুনিকায়ন, শেখ রাসেল ইনডোর স্টেডিয়াম, শেখ রাসেল সুইমিংপুল, রংপুর পালিচড়া স্টেডিয়াম, বিভাগীয় মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্স, আন্তর্জাতিক মানের খেলার স্টেডিয়ামের ভেন্যু তৈরি করেছেন।
আন্তর্জাতিক মানের স্টেডিয়াম সম্পর্কে বিভাগীয় কমিশনারের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, ডিপিপি অনুমোদন পেয়েছে। আগামী উন্নয়ন বরাদ্দ একনেক বৈঠকে পাস হলে জমি অধিগ্রহণসহ সব ধরনের কার্যক্রম শুরু হবে।
রংপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান বলেন, এলাকার খেলোয়াড় যেন খেলতে পারে, উজ্জীবিত হয় এবং দেশ ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের মান রক্ষা করে, সেই চেষ্টা সবার। আগের চেয়ে রংপুরে স্টেডিয়ামের অবকাঠামো উন্নয়ন হয়েছে, তা ধরে রাখার আহ্বান জানান তিনি।
সৌজন্য : সময়ের আলো