বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে গত ২০ বছরে বিশ্বের বিশাল অংশজুড়ে সমুদ্রের রং বদলে যাচ্ছে। নীল থেকে ক্রমশ সবুজে পরিবর্তিত হচ্ছে সমুদ্রের রং। সমুদ্রের রং নীল দেখানোর মূল কারণ হলো তার ওপর পড়া আকাশের ছায়া। এ কারণেই সমুদ্রের রং নীল দেখায়।
কিন্তু সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, আকাশের নীল ছায়া সত্ত্বেও সবুজাভ আভা দেখা যাচ্ছে বিশ্বের বিশাল অংশের সমুদ্রে। অর্থাৎ সমুদ্রের পানিতে এমন কিছু ঘটছে, যার প্রভাবে হচ্ছে এই পরিবর্তন।
খালি চোখে অবশ্য সমুদ্রের রং পরিবর্তনের ব্যাপারটি বুঝতে পারা খুবই কঠিন। যুক্তরাজ্যভিত্তিক বিজ্ঞানী ও গবেষক ২০০২ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে মোডিস অ্যাকুয়া স্যাটেলাইটের মাধ্যমে তোলা ছবি বিশ্লেষণ করে এ সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছেন। বুধবার তাদের গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিতও হয়েছে।
ভৌগলিকভাবে পৃথীবির তিন ভাগ পানি এবং একভাগ স্থল। প্রকাশিত প্রতিবেদনে গবেষকরা জানিয়েছেন, মৌসুমি জলবায়ু অঞ্চলের এলাকাগুলোতে সমুদ্রের রং পরিবর্তনের হার অপেক্ষাকৃত বেশি এবং গত ২০ বছরে সমুদ্রের যে পরিমাণ এলাকার রং পরিবর্তন হয়েছে, আয়তনে তা পৃথিবীর স্থলভাগের চেয়েও বড়।
গবেষকদলের প্রধান বি. বি. কায়েল বার্তাসংস্থা এএফপিকে জানান, ২০০২ সাল থেকে একটু একটু করে সমুদ্রের রং বদলে যাচ্ছে এবং যে গতিতে এই পরিবর্তন ঘটছে, তার সঙ্গে বৈশ্বিক উষ্ণতাবৃদ্ধির হারের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।
এএফপিকে বি. বি. কায়েল বলেন, ‘সমুদ্রের রং পরিবর্তনের অর্থ হলো সেখানকার জীবনচক্র বা বাস্তুসংস্থানের পরিবর্তন ঘটছে। সামুদ্রিক প্রাণীদের খাদ্যচক্রের সর্বনিম্নে অবস্থান করে প্ল্যাংকটন। যদি প্ল্যাংকটনের বৃ্দ্িধর কারণে পানির রং পরিবর্তন ঘটে তাহলে তার কিছু ইতিবাচক দিক রয়েছে।’
‘কিন্তু খুব বেশি আশাবাদী হওয়ার সুযোগ এক্ষেত্রে নেই। কারণ এমন অনেক সামুদ্রিক প্রানী রয়েছে— যারা তাপমাত্রার ব্যাপারে স্পর্ষকাতর এবং বৈশ্বিক তাপমাত্রা বাড়লে তারা চিরতরে বিলুপ্ত হয়ে যাবে।’