Bangla24.Net

শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , ৮ আশ্বিন ১৪৩০

সুনামগঞ্জে স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামী মৃত্যুদণ্ড

সুনামগঞ্জে যৌতুকের দাবিতে মারপিট করে স্ত্রীকে হত্যার দায়ের ঘাতক স্বামীকে মৃত্যুদণ্ডে আদেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার (৫ জুলাই) বিকেলে সুনামগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জাকির হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত ঘাতক স্বামী সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার দিনাইরটুক গ্রামের মখলিছ আলী।

আদালত সূত্র জানায়, ২০০৫ সালে জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার হাছন ফাতেমাপুর গ্রামের মোস্তফা মিয়ার বাড়িতে লজিং থাকতেন একই জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলার দিনাইরটুক গ্রামের মখলিছ আলী। একপর্যায়ে মোস্তফা মিয়ার মেয়ে কলি বেগমকে বিবাহের প্রস্তাব দিলে পারিবারিক সম্মতিতে গৌছ আলীর কাছে কলি বেগমকে বিবাহ দেয়া হয়। বিয়ের পর গৌছ আলী কলিকে বাড়িতে নিয়ে যায়। কিছুদিন সংসার করার পর গৌছ আলী স্ত্রী কাছে যৌতুক দাবি করতে শুরু করে। পরে বিভিন্ন সময়ে গৌছ আলীকে কলির বাবা প্রায় পাঁচ লক্ষাধিক টাকা প্রদান করেন। এতেও চাহিদা না মেটায় টাকা পয়সা দেওয়া বন্ধ করে দেন কলির বাবা মোস্তফা মিয়া। যৌতুক দেয়া বন্ধ করায় গৌছ আলী স্ত্রী কলি বেগমকে মারপিটসহ মানসিক যন্ত্রণা দিতে শুরু করে। ২০০৫ সালের ৫ জুলাই সকালে যৌতুকের টাকার জন্য স্ত্রী কলিকে বাবার বাড়িতে পাঠাইতে চাইলে স্ত্রী অস্বীকৃতি জানায়। এসময় কলি বেগমকে মারপিট করে বাজারে চলে যায় আর বাজারে যাওয়ার সময় বলে যায় বাড়িতে ফিরে যদি দেখে টাকা আনতে যায় নাই তাহলে প্রাণে হত্যা করে ফেলবে। এরপর দুপুর ১টার দিকে গৌছ আলী বাজার থেকে বাড়িতে ফিরে এসে দেখে কলি বেগম বাবার বাড়িতে টাকা আনতে না গিয়ে স্বামীর বাড়িতেই বসে আছে। এসময় গৌছ আলী স্ত্রী কলি বেগমকে প্রচন্ডভাবে মারপিট করলে কলি বেগম অজ্ঞান হয়ে পড়ে এবং একপর্যায়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করে। হত্যার ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য মৃত কলির মুখে বিষ ঢেলে দিয়ে প্রচার করতে থাকে কলি আত্মহত্যা করে মারা গেছে। পরদিন খবর পেয়ে কলির বাবা মোস্তফা মিয়া খবর পেয়ে গৌছ আলীর বাড়িতে গিয়ে নিজের মেয়ের লাশ দেখেন এবং লাশের গায়ে আঘাতের চিহ্ন দেখেন। পুলিশে খবর দেন। পরে কলির বাবা মোস্তফা মিয়া আদালতের একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

দীর্ঘ তদন্ত ও শুনানী শেষে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জাকির হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন।

শেয়ার